ডেস্ক রিপোর্ট ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:৫৯ পি.এম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি আবাসিক হলের প্রায় প্রায় ৩০ টি কেন্টিন সহ অসংখ্য হালকা ও ভারি খাবারের দোকানে শতাধিক শিশু শ্রমিক কাজ করে যদের বয়স ১৪-১৮ বছর। যাদের বেশিরভাগই নিম্নবর্গের পরিবার থেকে উঠে এসেছে। যাদের অনেকের বাবা নেই, ফলে অনেকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিও। কিন্তু তাদের বেতন খুবই সামান্য। বেশিরভাগেরই বেতন ৩০০০-৪০০০ হাজার টাকা মাত্র। এমনকি অনেকে বিনা বেতনে, শুধু থাকা এবং খাওয়ার বিনিময়েও কাজ করে।
যাইহোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই শিশুদের কাজের ব্যবস্থা করলেও তাদের মৌলিক অধিকার শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব দুটি স্কুল সহ, আশেপাশে অসংখ্য স্কুল থাকলেও কেন্টিনের এই শিশুদের পড়াশোনার কোনো সুযোগ কোথাও নেই। বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আ্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
শিশুশ্রমের বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে আনা হলে তারা বলেন, ‘হলের দোকান ও ক্যানটিনে শিশুরা কাজ করে, এটা আমরা জানি। যখন আমরা ছাত্র ছিলাম, তখনো দেখেছি। এই ছেলেরা খুবই দরিদ্র, কাজ থেকে বাদ দিলে তারা আরও অসহায় হয়ে যাবে। তবে আমরা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি। তাহলে তারা কাজের পাশাপাশি নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।’
যখন যিনিই ভিসি ছিলেন, সবাই-ই এরকম দায়সারা বক্তব্য দিয়ে গেছেন। কিন্তু বছরের পর বছর চলে গলেও, কেউই এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি। সূর্য সেন হলের ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন কে শিশুদের পড়াশোনার ব্যাপারে দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন শিশুরা পড়াশোনা করতে আগ্রহী নয়। কিন্তু বাস্তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে অনেকেই পড়াশোনার জন্য আগ্রহী কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু হলের ক্যান্টিন মালিক আবু জাফর এই বিষয়ে বক্তব্য এড়িয়ে যান এবং বলেন এটা আমাদের জন্য দুরূহ হয়ে যায় ।
ক্যান্টিন মালিকরা বিভিন্ন সময়ে আশ্বাস দিয়েছেন যে তারা শিশুদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু বাস্তবে তারা পড়াশোনার জন্য কোনো উদ্যোগ নেন নি। নীলক্ষেত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ আশেপাশে বেশ কয়েকটি সেচ্ছাসেবী স্কুল আছে। যেখানে তাদের কম খরচে এবং সহজেই পড়াশোনা করানো সম্ভব ।
যেখানে বর্তমানে সর্বনিম্ন বেতন ১২,০০০ টাকা সেখানে এই শিশুদের বেতন দেওয়া হয় ৩-৪ হাজার টাকা মাত্র। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষ থাকা খাওয়ার বাহিরে কোনো বেতনই দেওয়া হয় না।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যদি একটা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্যান্টিন মালিকদের শিশুদের পড়াশোনার ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়, তাহলে মালিকরা বাধ্য হয়ে তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মুখে বললেও কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেয় না।